জাপান ভ্রমণে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি যুক্তরাষ্ট্রের

নিউজ ডেস্কঃ  যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের জাপান ভ্রমণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করেছে। টোকিও অলিম্পিক শুরুর কয়েক সপ্তাহ আগে যুক্তরাষ্ট্র তার নাগরিকদের জাপান ভ্রমণের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা জারি করল।

তবে যুক্তরাষ্ট্রের অলিম্পিক কর্মকর্তারা বলেছেন, তাঁরা এ ব্যাপারে আত্মবিশ্বাসী যে তাঁদের ক্রীড়াবিদেরা এই গেমসে নিরাপদে অংশ নিতে সক্ষম হবেন।

স্থানীয় সময় গতকাল সোমবার মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তর থেকে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জাপান ভ্রমণের ব্যাপারে চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা জারি করা হয়। এটি মার্কিন নাগরিকদের কোনো দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে সর্বোচ্চ সতর্কতা হিসেবে গণ্য হয়ে থাকে।

বর্তমানে বিশ্বের ১৫১টি দেশ ভ্রমণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের চতুর্থ মাত্রার সতর্কতা জারি রয়েছে। অধিকাংশ ক্ষেত্রেই করোনা মহামারির কারণে এ সতর্কতা জারি করা হয়েছে।

এক বছরের বেশি সময় ধরে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের যাতায়াত কার্যত বন্ধ রয়েছে। করোনা মহামারি থেকে যুক্তরাষ্ট্র ক্রমশ বেরিয়ে আসছে। তবে জাপানের পরিস্থিতি এখনো নাজুক থাকায় যুক্তরাষ্ট্র এমন সতর্কতা জারি করছে।

জাপানে এখন পর্যন্ত সাত লাখের বেশি মানুষের করোনা শনাক্ত হয়েছে। দেশটিতে করোনায় মারা গেছেন প্রায় ১২ হাজার মানুষ। জাপানে অনেক দিন ধরে করোনার সংক্রমণের হার কম ছিল। কিন্তু এখন দেশটিতে নতুন করে করোনা সংক্রমণের ঢেউ দেখা যাচ্ছে।

তা ছাড়া করোনার টিকাদানের ক্ষেত্রেও জাপান পিছিয়ে আছে। এখন পর্যন্ত জাপানের মাত্র দুই শতাংশ লোক করোনার অন্তত এক ডোজ টিকা গ্রহণ করেছে। স্বাস্থ্যসেবী ও সিরিঞ্জের সংকটের কারণে দেশটিতে টিকাদান কার্যক্রম ব্যাহত হচ্ছে।

জাপানের একটা বড় অংশে জরুরি অবস্থা জারি রয়েছে। জাপান ইতিমধ্যে বেশির ভাগ ভ্রমণকারীদের সে দেশে প্রবেশ নিষিদ্ধ করেছে। করোনার নতুন ধরন ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় জাপান কোনো পর্যটক বা ব্যবসায়ী ভ্রমণকারীদের দেশে প্রবেশের অনুমতি দিচ্ছে না। কোনো ব্যতিক্রম ছাড়া এ নিষেধাজ্ঞার আওতায় যুক্তরাষ্ট্রও আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল (সিডিসি) বলেছে, জাপানে যুক্তরাষ্ট্রের ভ্রমণকারীদের সব ধরনের ভ্রমণ এড়ানো উচিত। জাপানের বর্তমান যে পরিস্থিতি, তাতে পুরোপুরি টিকা নেওয়া ভ্রমণকারীদের ক্ষেত্রেও করোনার ঝুঁকি থাকতে পারে।
জাপানের পাশাপাশি ভারত ও শ্রীলঙ্কায় মার্কিন নাগরিকদের ভ্রমণের ক্ষেত্রেও সতর্কতা সর্বোচ্চ পর্যায়ে উন্নীত করেছে যুক্তরাষ্ট্র।

টোকিও অলিম্পিক সামনে। এমন প্রেক্ষাপটে জাপান ভ্রমণের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য সর্বোচ্চ সতর্কতা জারির বিষয়টি অলিম্পিক অনুষ্ঠান নিয়ে অনিশ্চয়তা বাড়ছে। ঘোষিত সময়সূচি অনুযায়ী, ২৩ জুলাই থেকে ৮ আগস্ট পর্যন্ত টোকিও অলিম্পিক হওয়ার কথা।

করোনা মহামারির কারণে টোকিও অলিম্পিক বাতিল করার জন্য চাপ বাড়ছে। জাপানের মেডিকেল প্র্যাকটিশনার অ্যাসোসিয়েশন আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটির কাছে এ অনুষ্ঠান বাতিলের আবেদন জানিয়েছে। আবেদনে ৯ দিনে সাড়ে ৩ লাখের বেশি লোকজন স্বাক্ষর করে অলিম্পিক বাতিলের ব্যাপারে তাদের সমর্থন জানিয়েছে।

জাপানের ব্যবসায়ী নেতারাও অলিম্পিক বাতিল করার জন্য দাবি জানাতে শুরু করেছেন। ই-কমার্স কোম্পানি রাকুটেনের প্রধান নির্বাহী মহামারির সময় অলিম্পিক আয়োজনকে ‘আত্মহত্যার’ শামিল বলে উল্লেখ করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: