নিউজ ডেস্কঃ
ক্ষমতা দখলের তিন মাসের মাথায় নতুন শিক্ষানীতি তৈরির অজুহাতে মেয়েদের মাধ্যমিক স্কুলে পড়াশোনা নিষিদ্ধ করেছিল তালেবান সরকার। সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে দেশটির ভারপ্রাপ্ত উপশিক্ষামন্ত্রী আব্দুল হাকিম হেমাত বলেছেন, নতুন শিক্ষানীতি তৈরি না হওয়া পর্যন্ত মেয়েদের জন্য মাধ্যমিক স্কুল বন্ধ থাকবে। আফগান মেয়েরা বলছে, ‘পড়াশোনাহীন জীবন মৃত্যুদণ্ডের মতো।’ স্কুল বন্ধের মতো এমন অপ্রত্যাশিত সিদ্ধান্তে হতাশা প্রকাশ করেছে মাধ্যমিক পড়ুয়া আফগান মেয়েরা। দেশটির অন্তত ১৩টি প্রদেশের শিক্ষার্থী এবং প্রধান শিক্ষকদের সাক্ষাৎকার নিয়ে বুধবার এ প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে বিবিসি।
বাদাখশান প্রদেশের মিনার বয়স ১৫ বছর। স্কুলে যেতে না পারায় তিনি এবং তার বন্ধুরা মনে করছেন তারা হারিয়ে গেছেন। বাস করছেন অন্য কোনো জগতে। মীনা বলেন, ‘পড়াশোনা করতে না-পারা মৃতুদণ্ডের মতো মনে হয়।’ তাখার প্রদেশের ১৬ বছর বয়সি লায়লা বলেন, ‘হাড়িপাতিল পরিষ্কার থেকে শুরু করে যাবতীয় গৃহস্থালি কাজ ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নেই।’ শিক্ষকরা বেতন পাচ্ছেন না জুন মাস থেকে। শিক্ষকদের মতে, মেয়েদের প্রাথমিক স্কুল চালু করা হলেও দারিদ্র্য ও নিরাপত্তা ঝুঁকির কারণে আফগান দরিদ্র পরিবারগুলো সন্তানদের স্কুলে পাঠাতে অনিচ্ছা প্রকাশ করছে। বেড়ে গেছে বাল্যবিয়ের সংখ্যাও। এ জন্য প্রাথমিক স্কুলেও মেয়েদের উপস্থিতির হার কমে গেছে। কয়েকটি প্রদেশে স্থানীয় তালেবানদের সঙ্গে সমঝোতার মাধ্যমে মেয়েদের কয়েকটা স্কুল খোলা হয়েছে। বালখ প্রদেশের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মাজার-ই-শরিফের একজন প্রধানশিক্ষক জানান, তার স্কুলে মেয়ে শিক্ষার্থী আসছে এবং পরিস্থিতিও স্বাভাবিক আছে। তবে একই শহরের একজন শিক্ষার্থী বিবিসিকে জানায়, বন্দুকধারী তালেবানরা স্কুলগামী মেয়েদের মুখ এবং চোখ যাতে দেখা না যায়-তা নিশ্চিত করতে বলছে। এ কারণে তাদের স্কুলের এক-তৃতীয়াংশ মেয়ে স্কুলে আসা বন্ধ করে দিয়েছে।
উপশিক্ষামন্ত্রী আব্দুল হাকিম হেমাত জানান, তারা মেয়ে এবং ছেলে শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষ আলাদা করার ওপর জোর দিচ্ছেন। আর মেয়েদের জন্য নিরাপদ পরিবেশ নিশ্চিত করতে গিয়েই তাদের জন্য স্কুল চালু করতে দেরি হচ্ছে।