গ্রহণযোগ্য ইসি গঠনে রাজনৈতিক দল ও সুশীল সমাজের সহযোগিতা চান রাষ্ট্রপতি

নিউজ ডেস্কঃ

রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপ শুরু করে সবার মতামত নিয়ে গ্রহণযোগ্য একটি ইসি গঠনের আশা প্রকাশ করেছেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ।

সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে সংলাপের অংশ হিসেবে প্রথম দিনেই জাতীয় পার্টির সঙ্গে বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি।

বৈঠক শেষে রাষ্ট্রপতির প্রেস সচিব মো. জয়নাল আবেদীন সাংবাদিকদের বলেন, রাষ্ট্রপতি বলেছেন, নির্বাচন কমিশন নির্বাচনী প্রক্রিয়ার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান। বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ ফেব্রুয়ারি মাসেই শেষ হবে। তার পূর্বেই একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে আলোচনার এই উদ্যোগ।

‘রাষ্ট্রপতি আশা প্রকাশ করেন, রাজনৈতিক দলগুলোর মতামত ও পরামর্শের ভিত্তিতে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠন সম্ভব হবে এবং নতুন নির্বাচন কমিশন জাতীয় নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষভাবে সম্পাদন করতে সক্ষম হবে।’

রাষ্ট্রপতি এই প্রক্রিয়া সফল করতে সব রাজনৈতিক দল ও নাগরিক সমাজের সহযোগিতাও কামনা করেন।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান গোলাম মোহাম্মদ কাদের, এমপির, নেতৃত্বে আট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল এ আলোচনায় অংশ নেন।

জাপার প্রতিনিধি দলে ছিলেন- জাতীয় পার্টির সিনিয়র কো-চেয়ারম্যান ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ, এমপি, মহাসচিব মুজিবুল হক চুন্নু, কো-চেয়ারম্যান এবিএম রুহুল আমিন হাওলাদার, কো-চেয়ারম্যান কাজী ফিরোজ রশীদ, কো-চেয়ারম্যান সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা, কো-চেয়ারম্যান সালমা ইসলাম, সংসদে বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ ও জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য মশিউর রহমান রাঙ্গা।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান স্বাধীন ও নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনে তাদের প্রস্তাবনাসমূহ তুলে ধরেন।

সংলাপ শেষে বেরিয়ে জাপা চেয়ারম্যান জিএম কাদের বলেন, সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে বৈঠক করেছি। আমার রাষ্ট্রপতিকে ৩টি প্রস্তাব দিয়েছি। সংবিধানের আলোকে আইন প্রণয়ন করে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠনে কথা বলেছি। আমরা মনে করি, যে সময় আছে তার মধ্যে আইন তৈরি করা সম্ভব। প্রয়োজনে আইন তৈরি করতে প্রস্তুত আছি। সরকার চাইলে আমরা আইনটিও তৈরি করে দিতে পারি।

জিএম কাদের আরও বলেন, সরকার যদি মনে করে এখন আইন করা সম্ভব নয়, তাহলে রাষ্ট্রপতি অধ্যাদেশ জারি করে করতে পারেন। পরবর্তী সময়ে সেটি আইনে পরিণত করা যাবে। আর যদি অধ্যাদেশ জারি করা সম্ভব না হয়, তাহলে আগের মতো সার্চ কমিটি গঠন করা হলে আমরা ৪ জনের নামের প্রস্তাব দিয়েছি। তবে এখনই আমার দেওয়া নামগুলো আপনাদের জানাচ্ছি না।

নির্বাচন কমিশন পুনর্গঠন নিয়ে এবার তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রপতির সঙ্গে রাজনৈতিক সংলাপ অনুষ্ঠিত হচ্ছে।

প্রথমবার ২০১১ সালের ২২ ডিসেম্বর তৎকালীন রাষ্ট্রপতি প্রয়াত জিল্লুর রহমান বিএনপিসহ রাজনৈতিক দলগুলোকে সংলাপে ডাকেন। দ্বিতীয়বার ২০১৬ সালের ১৮ ডিসেম্বর থেকে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদের সংলাপ শুরু হয়, চলে ২০১৭ সালের ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত। বঙ্গভবনে পর্যায়ক্রমে মোট ৩১টি রাজনৈতিক দল এই সংলাপে অংশ নেয়।

উল্লেখ্য, বর্তমান প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে আগামী ১৪ ফেব্রুয়ারি। পরদিন নতুন কমিশন দায়িত্ব গ্রহণ করবে।

এর আগে রাষ্ট্রপতি ২০ জানুয়ারির মধ্যে নতুন সার্চ কমিটি গঠন করবেন। এই সার্চ কমিটি রাজনৈতিক দল, পেশাজীবী ও সুশীল সমাজের প্রতিনিধিসহ বিভিন্ন স্তরের ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে নতুন কমিশন গঠনে সংক্ষিপ্ত তালিকা প্রস্তুত করবে।

সার্চ কমিটি রাষ্ট্রপতির কাছে সিইসির জন্য দুইজন, চারজন নির্বাচন কমিশনারের জন্য ৮ জনের নাম প্রস্তাব করবে। পরে সার্চ কমিটির প্রস্তাবিত মোট ১০ জনের নামের তালিকা থেকে একজন সিইসি ও ৪ জন নির্বাচন কমিশনার চূড়ান্ত করবেন রাষ্ট্রপ্রধান।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: