সৌদি-থাইয়ের ‘ব্লু ডায়মন্ড অ্যাফেয়ার্স’ বিরোধের অবসান যেভাবে

এর মধ্য দিয়ে থাই নাগরিকদের আবারও সৌদি আরবে কাজের সন্ধানে যাওয়ার পথ তৈরি হলো। আর সৌদি আরবও বলছে, এখন তাদের লাখ লাখ অভিবাসী শ্রমিকের প্রয়োজন। এ ছাড়া এতে পর্যটন ও জ্বালানি পণ্যের মতো খাতগুলোতে দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এদিকে সৌদি আরবের এয়ারলাইনগুলোও ঘোষণা দিয়েছে, আগামী মে মাস থেকে তারা আবার সৌদি আরব থেকে থাইল্যান্ডে সরাসরি ফ্লাইট পরিচালনা শুরু করবে।

১৯৮৯ সালের ঘটনা। এক সৌদি যুবরাজের হয়ে পরিচ্ছন্নতাকর্মীর কাজ করতেন থাইল্যান্ডের এক নাগরিক। রাজপ্রাসাদ থেকে ৫০ ক্যারেট ওজনের নীল রঙের বিরল এক হীরা চুরি করেন তিনি। যে হীরার খোঁজ আজও পাওয়া যায়নি। রত্ন চুরির ঘটনার এক বছর পর থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে তিন সৌদি কূটনীতিককে হত্যা করা হয়। থাই পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা এতে জড়িত থাকলেও তাঁদের বিচার হয়নি। দুই দেশের এই বিবাদ ‘ব্লু ডায়মন্ড অ্যাফেয়ার্স’ নামে পরিচিতি পায়।

সৌদি বাদশাহ ফাহাদ বিন আবদুল আজিজ আল সৌদের বড় ছেলে প্রিন্স ফয়সালের পরিচ্ছন্নতাকর্মী থাই নাগরিকের নাম ক্রিয়াঙ্কারাই তেচামং। বিরল হীরা ছাড়া অনেক মূল্যবান গয়না চুরি করে থাইল্যান্ডে সেগুলো স্বল্পমূল্যে বিক্রি করেন তিনি। তবে কিছুদিন পর থাইল্যান্ডের পুলিশ কিছু গয়না সৌদি আরবে ফেরত পাঠায়। তাদের দাবি ছিল, ফিরিয়ে দেওয়া এসব গয়নার মূল্য ২০ লাখ মার্কিন ডলার। তবে সৌদি আরব জানায়, থাইল্যান্ডের ফেরত পাঠানো গয়নার বেশির ভাগ নকল।

রত্ন চুরির ঘটনার এক বছর থাইল্যান্ডে তিন সৌদি কূটনীতিককে গুলি করে হত্যা করা হয়। ঘটনা তদন্তে সৌদি আরব থেকে থাইল্যান্ডে যে ব্যক্তিকে পাঠানো হয় তিনিও নিখোঁজ হন। সন্দেহভাজন দুই থাই নাগরিকও রহস্যজনকভাবে প্রাণ হারান। রত্ন চুরির ঘটনায় শুধু পরিচ্ছন্নতাকর্মী ক্রিয়াঙ্কারাই ও আরও দুজনকে কারাদণ্ড দেওয়া হয়। সৌদি আরব তখন অভিযোগ তোলে, গয়নাগুলো আত্মসাৎ করে তদন্ত ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করেছেন থাইল্যান্ডের একাধিক ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তা।

সৌদি আরব সফরে প্রধানমন্ত্রী প্রায়ুত চান ওচা ১৯৮৯-৯০ সালে থাইল্যান্ডে ঘটে যাওয়া দুঃখজনক সেসব ঘটনার জন্য আন্তরিক অনুশোচনা প্রকাশ করেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

%d bloggers like this: